আজ থেকে অনেক বছর আগেও যদি পৃথিবীতে ইন্টারনেট থাকত, তাহলে কেমন হতো তখনকার বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনের ঘটনাগুলো?
আইজ্যাক নিউটন একদিন সকালে বাসার সামনের আপেলগাছের নিচে বসে চিপস খেতে খেতে ল্যাপটপে বাহুবলী টু দেখছিলেন। এমন সময় গাছ থেকে একটা আপেল সোজা তাঁর মাথার ওপরে পড়ল। ভালো করে মুছে-টুছে আপেলটাতে কামড় দিতেই হঠাৎ করে নিউটনের মাথায় অদ্ভুত এক চিন্তা খেলে গেল। চিন্তার বিষয়, আপেলটা গাছ থেকে ওপর দিকে না গিয়ে নিচে পড়ল কেন? নিউটন এই চিন্তায় যখন গভীরভাবে নিমজ্জিত তখন তাঁর কাছে এক বন্ধু এল বাহুবলী টু কপি করে নেওয়ার জন্য।
নিউটনকে চিন্তামগ্ন দেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী রে, এত টেনশন করিস কী নিয়ে? গার্লফ্রেন্ডের ফোন ওয়েটিং নাকি?’
নিউটন বললেন, ‘আরে নাহ্। ভাবছি, আপেলটা গাছ থেকে সোজা নিচে কেন পড়ল! ওপরে কেন গেল না!’
গুড আইডিয়া। নিউটন সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্নটা লিখে গুগলে সার্চ দিলেন। উত্তরে গুগল প্রথমেই প্রথম আলোর ওয়েবসাইট লিংক সাজেস্ট করল। সেখানে ঢুকতেই নিউটন পেলেন রস+আলোর সবজান্তা বিভাগটা। সেখানে এক পাঠকের একই প্রশ্নের উত্তরে সবজান্তা বলেছেন, ‘খুব সিম্পল। কারণ, ওপরে আপেল খাওয়ার মতো কেউ নেই।’
যুক্তিটা খুব পছন্দ হলো নিউটনের। তাই মাথা থেকে চিন্তাটা ঝেড়ে ফেলে বাহুবলী টু দেখায়
মন দিলেন।
আলবার্ট আইনস্টাইন

অতঃপর নাসা, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি, টাইম ম্যাগাজিনসহ বড় বড় পেজ আসল পোস্টদাতাকে খুঁজে না পেয়ে নিজেদের পেজ থেকে স্ট্যাটাসটা শেয়ার করল ‘কালেক্টেড’ লিখে। পরে কয়েক জায়গায় আইনস্টাইন এটা নিজের বলে দাবি করাতে অনেকের কাছে কপিবাজ বলে গালিও খেলেন। যার ফলে ফেসবুকবাসীর কাছে আইনস্টাইন নামটা অপরিচিতই থেকে গেল আজীবন!
খুব ছোটবেলায় বাবা মারা গেলেন। ছোট্ট কাজী নজরুল ইসলাম পড়ে গেলেন দারিদ্রে্যর সমুদ্রে। মনের দুঃখে ফেসবুকে নিজের আইডির নাম দিলেন ‘অবুঝ বালক দুখু মিয়া’। একটা লেটো গানের পেজের জন্য পোস্ট লিখে তঁার দিন চলতে লাগল কষ্টেসৃষ্টে। আরেকটু বড় হওয়ার পর বাড়ি থেকে পালিয়ে শহরে চলে এলেন নজরুল। চাকরি পেলেন একটা ছোটখাটো অনলাইন চায়ের দোকান ‘চা খোর ডট কমের’ অ্যাসিসট্যান্ট সেলসম্যান হিসেবে। অর্ডার অনুযায়ী ক্রেতার ঠিকানায় আধা ঘণ্টার মধ্যে চা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। পাশাপাশি ‘চা-খোর ডট কম’ পেজে স্ট্যাটাস লিখতে লাগলেন চা নিয়ে। সেখানকারই একটা স্ট্যাটাস দেখে মুগ্ধ হলেন বড় এক ট্রল পেজের
অ্যাডমিন। নজরুলকে ‘চা খোর ডট কম’ থেকে নিয়ে গিয়ে নিজের পেজে এডিটর হিসেবে নিয়োগ দিলেন তিনি। নজরুল খুব দ্রুতই নতুন নতুন ট্রলের আইডিয়া দিয়ে জনপ্রিয় হয়ে গেলেন। তাঁর বেশির ভাগ ট্রল পোস্টই ছিল ব্রিটিশ সরকারের বিরোধিতা করে। এ রকম এক ট্রলের জন্য নজরুলকে কারাগারেও যেতে হলো। বন্ধ হয়ে গেল ট্রল পেজটাও। কিন্তু সেটাই যেন সোনায় সোহাগা হলো। কারাগারে যাওয়ার সুবাদে রাতারাতি ফেসবুক সেলিব্রিটিতে পরিণত হলেন নজরুল।
রবার্ট ব্রুস
ছোটবেলা থেকেই যুদ্ধভিত্তিক গেমের পোকা রবার্ট ব্রুস। কিন্তু কখনোই কোনো গেমে জিততে পারেনি তিনি। কোনো গেমেরই লেভেল কমপ্লিট করা তো দূরের কথা। বারবার শুধু ‘মিশন ফেইলড’ হতো। তাই অধৈর্য হয়ে রেগেমেগে তিনি গেম খেলাই বাদ দিলেন। আনইন্সটল করে ফেললেন সব গেম। তারপর হতাশ হয়ে পিসিটা অফ করে পাশের রুমে যেতেই দেখলেন, তার ছোট ভাই কম দামি চায়না ফোনে টুজি নেটওয়ার্ক দিয়ে গান ডাউনলোড করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বারবার অর্ধেক ডাউনলোড হতেই ‘নো নেটওয়ার্ক কানেকশন’ দেখাচ্ছে। রিস্টার্ট দিলে আবার নতুন করে ডাউনলোড শুরু হয়। এভাবে পাক্কা সাতবার কখনো অর্ধেক আবার কখনো অর্ধেকের বেশি ডাউনলোড হয়ে ফেইলড হওয়ার পর শেষমেশ অষ্টমবারে ডাউনলোড সাকসেসফুল হলো।
এটা দেখে সাহস ফিরে পেলেন রবার্ট ব্রুস। এবং তখনই রুমে গিয়ে পিসি অন করলেন তিনি। ইন্সটল করলেন যুদ্ধের গেমগুলো। সব লেভেল জিতে সক্ষম হলেন সফলভাবে গেম কমপ্লিট করতে।
No comments:
Post a Comment