সুন্দরবনের কাছে বাগেরহাটের রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র
নির্মাণ বন্ধের দাবিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয়
কমিটির আধাবেলা হরতাল শুরু হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বাধা আর কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে।
বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে টিএসসি
মোড় থেকে হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হয়ে
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের রাস্তায় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
এক পর্যায়ে সেখানে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া শুরু হলে পুলিশ পিছিয়ে যায় এবং বিক্ষোভকারীরা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানের কাচ ভাঙচুর করে।
সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হরতালকারীরা মিছিল নিয়ে আবার শাহবাগের দিকে এগোতে
থাকলে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাসের শেল ছোড়ে। বাধা পেয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর
নেতাকর্মীরা চারুকলা অনুষদের সমানের রাস্তায় অবস্থান নেন এবং সেখানে টায়ারে
আগুন দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লাকী আক্তার ও সাধারণ সম্পাক জি এম জিলানী শুভ,
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা ও
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইভা মজুমদারসহ বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ও
বিভিন্ন বাম ছাত্রসংগঠনের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে।
প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর যুগ্ম আহ্বায়ক
ইকবাল কবীর বলেন, আমাদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ ৫ দফা টিয়ার শেল ছুড়েছে,
রাবার বুলেট ছুড়েছে।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লাকী আক্তারের বলেন, ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী পুলিশের রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বিক্ষোভ
মিছিল করে তারা শাহবাগের দিকে আসতে চাইলে পুলিশ বাধা দিয়েছে। থানার সামানে
আমাদের ব্যারিকেড আছে।
কয়েক দফা টিয়ারশেল ছোড়া হয়েছে স্বীকার করে বলেন, বিক্ষোভকারীদের শাহবাগ
মোড়ে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে। আশপাশে কয়েকটি হাসপাতাল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা
রয়েছে। এ কারণেই পুলিশ বাধা দিয়েছে।
আধাবেলার এই হরতালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরে হরতাল সমর্থকদের তৎপর
দেখা গেলেও শাহবাগ মোড় হয়ে যানবাহন চলছে স্বাভাবিক দিনের মতই। রাজধানীর
অন্যান্য এলাকার প্রধান সড়কগুলোতেও নগর পরিবহন ও ব্যক্তিগত যান চলাচল
স্বাভাবিক।
গতকাল জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে ঢাকা মহানগরের সব
প্রতিষ্ঠান, যান্ত্রিক পরিবহন ও ব্যক্তিগত কাজ আজ বেলা দুইটা পর্যন্ত বন্ধ
রেখে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করে সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলনে শরিক হতে
ঢাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২৬ জানুয়ারির হরতাল ক্ষমতার সংকীর্ণ সংঘাতে সম্পদ
ধ্বংসের নয়, বরং সম্পদ রক্ষা, সম্পদ সৃষ্টি ও বাংলাদেশ রক্ষার। এই হরতাল
জ্বালাও-পোড়াও নয়, মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের।
জাতীয় কমিটির বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ৭ বছর ধরে সুন্দরবনবিনাশী রামপাল কয়লা
বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলসহ বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যা সমাধানের জন্য ৭ দফা
বাস্তবায়নে তাঁরা লংমার্চ, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, মহাসমাবেশসহ নানা কর্মসূচি
পালন করলেও সরকার এই প্রকল্প বাতিল না করে উল্টো সুন্দরবনের জন্য ক্ষতিকর
নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। তাই তারা বাধ্য হয়ে হরতাল পালনের কর্মসূচি দিয়েছেন।
পথচারী, সাইকেল-রিকশা-ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স, গণমাধ্যমসহ বিদ্যুৎ-ফায়ার
সার্ভিসের গাড়ি, কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে
জানিয়েছে জাতীয় কমিটি।
N.S : ABnews24.com
No comments:
Post a Comment